মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউরিন ইনফেক্শন অত্যন্ত অস্বস্তিকর সমস্যা। আমাদের দেহ থেকে তরল বজ্ৰ বের হওয়ার জন্য যে সিস্টেম রয়েছে তাকেই মূত্রতন্ত্র বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট বলে। মূত্রতন্ত্রে যেকোনো অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হলে তাকে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) বলে। কিডনি, মূত্রনালি সহ একাধিক অংশে এই ধরণের সংক্রমণকে উরিনে ইনফেকশন বলা হয়। মূত্রনালিতে সংক্রামণের জন্য ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা ভাইরাস দায়ী হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়াই দায়ী।
মূত্রনালির সংক্রামণের লক্ষণ
প্রস্রাবের বেগ আসা সত্বেও ঠিকমতো প্রস্রাব না হওয়া বা খুবই সামান্য হওয়া, প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করা, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন ও দুর্গন্ধ হওয়া, ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া, পেট ব্যথা, জ্বর, বমিবমি ভাব ও বমি হওয়া, অবসন্ন ও ক্লান্ত অনুভব করা। ছোটদের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া, জ্বর, খেতে না চাওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
এই রোগে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। কারণ মেয়েদের মূত্রনালির পায়ুর খুব কাছাকাছি থাকে। ফলে মলদ্বার দিয়ে নির্গত ব্যাক্টেরিয়া সহজে মূত্রনালীতে যেতে পারে। এছাড়া মেয়েদের মূত্রনালি ছোট হওয়ায় ব্যাক্টেরিয়া সহজেই মূত্রথলি ও কিডনিতে পৌঁছে সক্রামণ ঘটাতে পারে। প্রস্রাবে পরীক্ষার মাধ্যমে মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউটিআই নির্ণয় করা যায়। এই সংক্রমণ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে মূত্রনালির সংক্রমণ থেকে পুরোপুরি মুক্তি মেলে। যেমন,
১) আপেল সিডার ভিনেগার ইউরিনারি নালীর ইনফেকশন রোধে সক্ষম। এই ভিনেগার প্রাকৃতিক এন্টিব্যায়োটিক হিসাবে কাজ করে। এক গ্লাস জলের সঙ্গে ২ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেয়ে নিন। উপকার পাবেন।
২) লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
৩) বেকিং সোডার অ্যাসিড উপাদান প্রস্রাবের সমস্যা রোধ করে এবং ব্যথা দূর করে। এই সমস্যা এড়াতে এক চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে এক গ্লাস জল মিশিয়ে প্রতিদিন ১/২ বার খান।
৪) আনারসের থাকা ব্রোমেলাইন মূত্রনালির সংক্রমণের জ্বালাপোড়া রোধ করে। তবে শুধু আনারস না খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিব্যায়োটিকও খেলে ভালো হবে।
৫) অবশ্যই প্রচুর জল খান। শসাও খেতে পারেন।
৬) এক মুঠো সেলেরি বীজ চিবিয়ে রস খেতে পারেন। অথবা বীজ দিয়ে ঢেকে রাখুন, ৮ মিনিট পর মিশ্রণটি ছেঁকে খেয়ে নিন।
৭) হট ওয়াটার ব্যাগ নিয়ে তলপেটের উপর রাখতে পারেন। এতে দ্রুত প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও ব্যথা দূর হবে।
৮) আরামদায়ক পোশাক পড়ুন।